ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম, আসসালামুআলাইকুম, প্রিয় পাঠক-পাঠিকা। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আজকে আমি আপনাদেরকে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানাব। আপনারা অনেকেই জানেন না ড্রাইভিং লাইসেন্স কিভাবে ঘরে বসে অনলাইনে করতে হয়। দালাল ছাড়া কিভাবে অনলাইনে আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য আবেদন। কোন চিন্তা নেই. আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমি আপনাদেরকে সমস্ত কিছু বলে দিব।
এর ফলে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স সংক্রান্ত সকল বিষয় দিয়ে সম্পর্কে একটি কমপ্লিট ধারণা আসবে বলে আমি মনে করি। বর্তমান সময়ে দালাল ছাড়া কোন কাজ করা যাচ্ছে না। কিভাবে দালাল ছাড়া সম্পূর্ণ নিজে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করবেন এবং কিভাবে সেটি হাতে পাবেন? আজকের এই আর্টিকেলের মধ্যে তা বিস্তারিত আলোচনা করব।
তাই ধৈর্য সহকারে আপনি যদি আজকের আর্টিকেলটি পড়েন, তাহলে টাইপিং লাইসেন্স সংক্রান্ত সকল বিষয়ে আর কোন ব্লক করতে হবে না।
প্রতিদিন চলার পথে আমরা প্রায়ই গাড়িতে চড়ে থাকি অথবা কখনো চালকের আসনে বসে চালক হিসেবে গাড়ি চালাই। রাস্তায় চলাচলের জন্য গাড়ির কোনো বিকল্প নেই। কারণ বর্তমান সময়ে গাড়ির জনপ্রিয়তা এত বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বলার বাহিরে। বর্তমানে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে এই গাড়ি। বর্তমান সময়ে গাড়ি চালানো শেখার কোনো বিকল্প নেই। আর আপনার এই ড্রাইভিং লাইসেন্স আপনার গাড়ি চালানোর দক্ষতার পরিচয় দিয়ে থাকে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স একটি সময়সাপেক্ষ ও জটিল বিষয়। এটি করতে অনেক সময় লাগে। যদি নির্ভুল ও দেখেশুনে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে না পারেন, সে ক্ষেত্রে অনেক ঝামেলার সম্মুখীন হতে হয়। আপনি যেন সেই ঝামেলায় না পড়েন সেই জন্য আজকের এই আর্টিকেলটিতে আমি আপনাদেরকে উপহার দিচ্ছি।
আরও পড়ুনঃ
বিআরটিএ এর কাজ কি?
ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কাজ কি? ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য কি আপনাকে জানতে হবে? ড্রাইভিং লাইসেন্স কোথা থেকে করতে হয়? কোন প্রতিষ্ঠান ড্রাইভিং লাইসেন্স করে বা বানায়! সেই সম্পর্কে আপনাকে আগে জানতে হবে। বাংলাদেশের লাইসেন্স যে প্রতিষ্ঠান করে তার নাম বিআরটিএ (BRTA)। যার পূর্ণরূপ হলো Bangladesh Road Transport Authority. এটা বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান।
এখানে দেশি-বিদেশি, ইন্টারন্যাশনাল ড্রাইভিং লাইসেন্স, পাসপোর্ট, ভিশা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কাজ করে। বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠান বিআরটিএ কিভাবে সাধারণ জনগণকে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদান করে সে সম্পর্কে বি আর টি এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে পেয়ে যাবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স কি?
আপনাদের মনে হয় অনেকেরই প্রশ্ন জাগে ড্রাইভিং লাইসেন্স কি? অনেকেই জানেন না আসলে ড্রাইভিং লাইসেন্স কেন করবো? তাদের জন্য বলছি আপনারা যারা জানেন না! ড্রাইভিং লাইসেন্স মূলত আপনি আপনি যে দক্ষতার সহিত খুব সুন্দর ভাবে গাড়ি চালাতে পারেন তার একটি প্রমাণ। ড্রাইভিং লাইসেন্সের মাধ্যমেই আপনাকে যাচাই করে গাড়ি চালানোর অনুমতি দেয়া হবে।
তা না হলে আপনি যে গাড়ি চালাতে পারেন সেটার কোন দলিল থাকবে না। তাই জন্য বাংলাদেশ সরকার ড্রাইভিং লাইসেন্সের ব্যবস্থা করেছে। শুধু বাংলাদেশ সরকার নয় এটি গোটা বিশ্বেই এই পদ্ধতিতে গাড়ি চালানোর দক্ষতা ও পারমিশন দিয়ে থাকে সাধারণ জনগণকে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স কেন করবো?
ড্রাইভিং লাইসেন্স করা একটি গাড়ি চালকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একজন গাড়িচালক যে গাড়ি চালাতে পারে তার পরিচয় স্বরূপ ড্রাইভিং লাইসেন্স দেয়া হয়। তার কাছে যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকে তাহলে সে বেআইনি ভাবে গাড়ি চালাচ্ছে বলে সরকার গণ্য করবে। আর একজন নাগরিক হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে যেকোনো কাজ করা উচিত নয়।
তাই আপনি যদি গাড়ি চালাতে পারেন তাহলে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকা অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয়। ড্রাইভিং লাইসেন্স যে আপনার গাড়ি চালানোর দক্ষতার প্রমাণ দিবে তা নয়, ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মনের মধ্যে বিশ্বাস এর জন্ম হবে যে আপনি সরকারের সার্টিফিকেটধারী একজন গাড়িচালক।
এছাড়াও পাশাপাশি রোডের নিয়ম কানুন জানার জন্য আমাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়া উচিত। একজন অসচেতন ব্যক্তি কখনোই বুঝবে না ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মর্ম কি। দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে গাড়িতে আমাদেরকে চলতে হয় অথবা কখনও কখনও আমাদেরকে চালক হিসেবে গাড়ি চালাতে হয়। সেজন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স আমাদের জীবনে অনেক প্রয়োজন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স কিভাবে করব?
ড্রাইভিং লাইসেন্স মূলত দুইটি মাধ্যমে আপনি করতে পারবেন প্রথমত সরাসরি বিআরটিএ অফিসে গিয়ে। অথবা আপনি অনলাইনে ঘরে বসেই ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে 2023?
ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে কত টাকা লাগে? এটা অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে। ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে গেলে আপনাকে অবশ্যই নিজে থেকে করতে হবে। তাহলে অনেক কম খরচে আপনি ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে পারবেন। আর যদি দালালের সহযোগিতা নেন!
তাহলে আপনাকে গুনতে হবে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৫ হাজার কারো কারো ক্ষেত্রে ২০ হাজার টাকাও লাগতে পারে। আর যদি আপনি নিজে থেকে ঘরে বসে অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স করেন! সেক্ষেত্রে আপনার খুব জোর হলে পাঁচ থেকে ছয় হাজার টাকা খরচ হতে পারে।
লাইসেন্সের প্রকারভেদঃ-
১. লার্নার বা শিক্ষানবিশ লাইসেন্স। ✓
২. স্মার্ট কার্ড লাইসেন্স। ✓
৩. আন্তর্জাতিক লাইসেন্স। ✓
ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার পূর্ব শর্তঃ–
✓◽ ড্রাইভিং লাইসেন্স পর প্রথম শর্ত হলো লার্নার বা শিক্ষা নিবাস এর জন্য আবেদন করতে হবে।
✓◽ শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম অষ্টম শ্রেণী পাস হতে হবে।
✓◽ পেশাদার লাইসেন্স এর জন্য কমপক্ষে ২১ বছর বয়স হতে হবে।
✓◽ অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য কমপক্ষে ১৮ বছর বয়স হতে হবে।
✓◽ সম্পূর্ণ সুস্থ থাকতে হবে শারীরিকভাবে ও মানসিকভাবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়াঃ-
● লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে সবার প্রথমে।
● লার্নার এর জন্য (bsp.brta.gov.bd)- এই ওয়েবসাইডটিতে আবেদন করতে হবে
● শিক্ষানবিশ বাননোর জন্য আবেদন করার পর সাথে সাথে লার্নারটি ইস্যু হবে। এরপর লার্নার বা শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রিন্ট করে বের করে নিতে হবে।
● উক্ত লার্নার এর মধ্যে পরীক্ষার তারিখ দেওয়া থাকবে। উক্ত তারিখ অনুযায়ী দুই তিন মাস প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর নির্ধারিত কেন্দ্রে লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড টেস্টে অংশগ্রহণ করতে হবে।
● পরীক্ষার সময় অবশ্যই উক্ত লার্নার প্রমাণস্বরূপ নিয়ে যেতে হবে। (মূল কপি) এবং লিখিত পরীক্ষা দেওয়ার জন্য একটি কলম নিয়ে যেতে হবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
● নির্ধারিত ফরম এর মধ্যে আবেদন করতে হবে অথবা অনলাইনেও আবেদন করতে পারেন।
● আবেদনকারীর ছবির সাইজ হবে ১৫০ কে.বি অথবা (৩০০ x ৩০০) পিক্সেলের।
● সরকারি ডাক্তারের মেডিকেল সার্টিফিকেট লাগবে এই ছবির সর্বোচ্চ সাইজ থাকবে ৬০০ কেবি
● কারেন্টের বিল অথবা ইউটিলিটি বিলের ফটোকপি লাগবে যার সর্বোচ্চ সাইজ হবে ৬০০ কেবি।
● জাতীয় পরিচয় পত্রের স্ক্যান কপি (সর্বোচ্চ ৬০০ কেবি)
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ (আবেদনকারীর ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয় পত্রের ঠিকানা একই রকম না হয় তাহলে বর্তমান ঠিকানার ইউটিলিটি বিল দিতে হবে।)
● আগের যদি ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকে তার স্ক্যান কপি দিতে হবে। আর না থাকলে দিতে হবে না। সর্বোচ্চ ৬০০ কেবি
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ (ড্রাইভিং লাইসেন্সের নবায়ন/শ্রেণী পরিবর্তন/শ্রেণী সংযোজন/ লাইসেন্সের ধরণ পরিবর্তণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)
● লার্নার বা শিক্ষানবিস আবেদনের জন্য যে তথ্যগুলো আপনি দিবেন সেগুলো যদি ভুয়া বা ভুল বলে প্রমানিত হয়, তাহলে ড্রাইভিং লাইসেন্স, স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল করা হবে। এবং আপনার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
● লার্নার আবেদনের জন্য নির্ধারিত ফ্রি প্রথম ক্যাটাগরি ৫১৮ টাকা।
● দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে ৭৪৮ টাকা অনলাইনে পরিশোধ করতে হবে।
আরও পড়ুনঃ
লার্নার বা শিক্ষানবিশ লাইসেন্সের আবেদনের নিয়মঃ-
- প্রথম ধাপে আপনাকে এই শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন ফরমটি পূরণ করতে হবে।
- আর এই ফরমটি আপনি বিআরটিএ থেকে সংগ্রহ করে অথবা তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
- এই ফরমটি টির মধ্যে প্রথম পৃষ্ঠায় আপনাকে আপনার পরিচয়, নাম ঠিকানা বাবার নাম মায়ের নাম, ইত্যাদি সমস্ত কিছু দিতে হবে। এবং দ্বিতীয় পৃষ্ঠা টি মেডিকেল সার্টিফিকেট হিসেবে দেয়া হয়েছে। সেখানে আপনাকে সরকারি ডাক্তার কর্তৃক পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে করার পর ডাক্তার ওই মেডিকেল স্বাক্ষর দিবেন। অর্থাৎ সরকারি ডাক্তারের স্বাক্ষর নিতে হবে।
- ফরমটি পূরণ করা হয়ে গেলে নির্ধারিত ব্যাংকে টাকা পরিশোধ করে। এর রশিদ এবং আপনার এনআইডি কার্ড বা জন্ম নিবন্ধন কার্ড এর ফটোকপি এবং আপনার পাসপোর্ট সাইজের তিন কপি ছবি লাগবে। আপনার বিদ্যুৎ বিল অথবা ইউটিলিটি বিল এর ফটোকপি সাথে যুক্ত করতে হবে। উক্ত ফরমটির সাথে।
- এরপর আপনাকে ফরমটি বিআরটিএ অফিসে জমা দিতে হবে। আর যদি অনলাইনে আবেদন করে থাকেন তাহলে সাথেসাথেই আপনাকে ড্রাইভিং লাইসেন্স লার্নার কার্ড টি দেয়া হবে এবং তার মধ্যে পরীক্ষার ডেট উল্লেখ করা থাকবে।
- এজন্য সব সময় অনলাইনে আবেদন করার চেষ্টা করবেন। তাহলে লার্নার কার্ড টি পেতে দেরি হবে না। আর যদি সরাসরি বিআরটিএ অফিসে এই ফরমটি জমা দেন, তাহলে আপনাকে একটি তারিখ দেওয়া হবে ২/৪ দিন। ওই তারিখের মধ্যেই আপনাকে বিআরটিএ-র অফিসে গিয়ে রিসিপশন থেকে লার্নার ফরম সংগ্রহ করতে হবে।
- রিসিপশন থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্স ফরম সংগ্রহ করার পর আপনাকে বিআরটিএ-এর নির্দিষ্ট রুম থেকে একজন কর্মকর্তার থেকে স্বাক্ষর করিয়ে নিতে হবে।
- স্বাক্ষর করা হয়ে গেলে আপনি ফরমটি নিয়ে আবার রিসিপশন বুথে জমা দিবেন এরপর লার্নার টি আপনার সাথে রেখে দিবেন। এখন আপনি চাইলে এই লার্নার কার্ড দিয়ে লাইসেন্স প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। পাশাপাশি আবেদন করতে পারবেন।
স্মার্ট কার্ড লাইসেন্স আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রঃ-
∎ লার্নার বা শিক্ষানবিশ ফরম বা নির্ধারিত ফরমে আবেদন।
∎ সরকারি ডাক্তার এর স্বাক্ষরকৃত মেডিকেল সার্টিফিকেট।
∎ এনআইডি কার্ড এর সত্যায়িত ফটোকপি।
∎ পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশন।
∎ এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
স্মার্ট কার্ডের ফর্ম (বিআরটিএ) |
স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স আবেদন করার নিয়মঃ-
- স্মার্ট কার্ড আবেদনের জন্য যে ফরমটি আপনাকে দেওয়া হয়েছে সেই ফরমটি সর্বপ্রথম আপনাকে পূরণ করতে হবে। তবে ফরমটি পূরন করার সময় অবশ্যই অনেক সতর্কতার সহিত পূরণ করবেন। কারণ এখানে একটি ভুল হলেই পরবর্তীতে অনেক সমস্যায় পড়তে হতে পারে। বিশেষ করে ফরম পূরণের ক্ষেত্রে ইংরেজি অক্ষরগুলো বড় হাতের দিতে হবে এবং যে সমস্ত পয়েন্ট গুলো আপনার জন্য নয় সেগুলো খালি রাখতে হবে।
- এরপর উক্ত ফরমের সাথে প্রয়োজনীয় কাগজ যেমন ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি, লার্নার কার্ড, মেডিকেল সার্টিফিকেট, লার্নার কার্ডের টাকা জমা দেওয়ার রশিদ, তিন কপি ছবি ইত্যাদি কাগজ পত্র ফরমের সাথে যুক্ত করুন।
- পরীক্ষায় পাশ করার পর যে কাগজগুলো আপনাকে দেওয়া হয়েছিল সেই কাগজ সহ উক্ত ফরমটি বিআরটিএ অফিসে জমা দিতে হবে এবং সেই রেজাল্টই বিআরটিএ অফিসে আসছে কিছুটা সময় লাগতে পারে। এতে করে অনেকে আবার ঘাবরিয়ে যায় এখানে ঘাবড়ানোর কিছু নেই রেজাল্ট আপনি পাবেন।
- রেজাল্ট চলে আসলে আপনাকে একটি রশিদ দেওয়া হবে এবং সেই রশিদে আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্টের তারিখ দেয়া থাকবে সেই তারিখে আপনার ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা বায়োমেট্রিক তথ্যাদি নেওয়া হবে।
- এরপর ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়া হয়ে গেলে আপনাকে একটি রশিদ দেওয়া হবে। সেই রশিদটি নিয়ে আপনাকে বিআরটিএ অফিসে চলে যেতে হবে। সেখানে প্রথমে টোকেন কালেক্ট করবেন এবং সেই টোকেনের নাম্বার অনুযায়ী আপনাকে ভিতর প্রবেশ করতে হবে। ভিতরে প্রবেশ করার পর নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে আপনার তথ্য জমা দিতে হবে এবং সে তথ্যগুলো অবশ্যই ভালো করে পরীক্ষা করে নিবেন।
- এরপর ভেতরে আপনাকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে হবে পাশাপাশি আপনার ছবিও তোলা হবে। ছবি তোলার পরে আপনাকে জানিয়ে দেওয়া হবে স্মার্ট কার্ড লাইসেন্স কবে দেওয়া হবে। অথবা আপনার ফোনে নির্দিষ্ট তারিখে এসএমএস চলে যাবে। তখন আপনি বিআরটিএ অফিসে গিয়ে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স স্মার্ট কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেন।
ড্রাইভিং লাইসেন্সের প্রকারভেদঃ-
সাধারণত ড্রাইভিং লাইসেন্স দুই প্রকার।
১. পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স।
২. অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স।
১. পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স।
পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স তিন প্রকার।
- পেশাদার ভারী লাইসেন্স।
- পেশাদার হালকা লাইসেন্স।
- পেশাদার মিডিয়াম লাইসেন্স।
পেশাদার ভারী লাইসেন্স:-
সাধারণত যে মোটরযান গুলো ৬৫০০ কেজি এর বেশি ওজনের সে গুলোকে পেশাদার ভারী লাইসেন্স বলা হয়। এটি সাধারণত ৮ চাকা ১০ চাকার যে বড় গাড়িগুলো রয়েছে সেই গাড়িগুলো হয়ে থাকে। আর পেশাদার ভারী লাইসেন্স যদি আপনি নিতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার বয়স ন্যূনতম ২৬ বছর হতে হবে। পেশাদার ভারী ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য পেশাদার মধ্যমগ্রাম লাইসেন্স কমপক্ষে ৩ বছর ব্যবহার করতে হবে। তাহলেই আপনি ভারী পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর আবেদন করতে পারবেন।
পেশাদার হালকা লাইসেন্স:-
যে মোটরযানের ওজন ২৫০০ কেজির নিচে। সেই যানবাহনগুলো পেশাদার হালকা লাইসেন্স এর অন্তর্ভুক্ত। যেমনঃ- মোটরসাইকেল। ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য কমপক্ষে ২১ বছর বয়স হতে হবে।
পেশাদার মিডিয়াম লাইসেন্স:-
যে যানগুলোর ওজন ২৫০০ থেকে ৬৫০০ কেজি এর মধ্যে। সেই যানবাহনগুলোকে পেশাদার মিডিয়াম বা মধ্যম লাইসেন্সের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যেমনঃ- কার, ছোট ট্রাক, মাঝারি ট্রাক, সিএনজি ইত্যাদি। আর পেশাদার মধ্যম লাইসেন্সটি পাওয়ার জন্য আপনাকে পেশাদার হালকা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর ব্যবহার কমপক্ষে তিন বছর করতে হবে। তাহলেই আপনি পেশাদার মধ্যম লাইসেন্স এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
FAQ
লার্নার ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে কি কি করা যায়?
লার্নার দিয়ে আপনি গাড়ি চালানোর প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। হালকা-পাতলা মোটরসাইকেল চালাতে পারবেন।
অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম:-
অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স করার জন্য আপনাকে প্রথমে লার্নার করতে হবে আর লার্নার এর জন্য (bsp.brta.gov.bd)- এই ওয়েবসাইডটিতে আবেদন করতে হবে। এই ওয়েবসাইটটিতে গেলে আপনি এমনিতেই বুঝে যাবেন অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স কিভাবে করতে হয়।
মেডিকেল সার্টিফিকেট কিভাবে পাবো?
মেডিকেল সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য আপনাকে সরকারি কোন ডাক্তারের কাছে গিয়ে আগে আপনার শারীরিক ও মানসিক ভাবে আপনি ঠিক আছেন কিনা সেটা পরীক্ষা করে তারপরে আপনাকে ওই ডাক্তারি মেডিকেল সার্টিফিকেট দিবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক কিভাবে করে?
মোবাইলের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে DL <স্পেইস> রেফারেন্স নাম্বার এবং পাঠিয়ে দিতে হবে 26969 এই নাম্বারটিতে তাহলে আপনি আপনার কাংখিত ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করতে পারবেন।
শেষ কথাঃ
ড্রাইভিং লাইসেন্স করার নিয়ম, আশা করি সবাই বুঝতে পেরেছেন। কিভাবে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে হয়। আমি আপনাদেরকে যথাসাধ্য বোঝানোর চেষ্টা করেছি সাবলীল ভাষায়। এর চেয়ে আর কোন সহজ ভাষা আমার কাছে ছিল না। যদি আপনি এতোটুকু উপকৃত হয়ে থাকেন আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে তাহলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করে আমাকে জানিয়ে দিবেন আপনার মূল্যবান মতামত। ধন্যবাদ সবাইকে।
আপনার জন্য আরও